নিজস্ব প্রতিবেদক ::৷ চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে অযত্নে-অবহেলা, খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে হাতি শাবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রাখে পার্ক কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করেই হাতির শাবকটি মৃতদেহ দ্রুত মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পার্কের বন্যপ্রাণী হাসপাতালে শাবকটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো.মঞ্জরুল আলম বলেন, চিকিৎসার অভাবে হাতির শাবকটি মারা গেছে, সেটি সঠিক নয়। শাবকটি সার্বক্ষণিক দেখভালের মধ্যে ছিল চরম অবহেলা। মৃত্যুর আগেও খাওয়া দাওয়া করেছ। হঠাৎ সকালে অসুস্থবোধ করলে পার্কের আইসোলেশন সেন্টারে রেখে শাবকটির চিকিৎসা চলছিল। এরপরই মারা গেছে।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারিতে কক্সবাজারের টেকনাফ পাহাড়ে একটি মা হাতির শাবক জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায়। পরদিন বনবিভাগ শাবকটি উদ্ধার করে লালন পালনের জন্য চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে পাঠায়। সেখানে প্রায় চার মাস ধরে বড় হচ্ছিল শাবকটি। দুই দিনের বাচ্চা শাবকটি পার্কে আনা হয়েছিল। এরপর লালন পালন করছিল এক মাহুত সুশীল চাকমা।
সূত্র জানায়, গত ১৫ দিন ধরে পার্কের বন্য প্রাণী হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে থাকা শাবকটির শরীরে নানা চর্মরোগের মতো দাগ দেখা যাচ্ছিল। হাতিটি তেমন খাওয়া দাওয়া করছিল না।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ পার্ক কতৃপক্ষের অযত্ন, অবহেলা, নিম্নমানের খাবার, খাদ্যভাব ও চিকিৎসার অভাবে প্রায় সময়ে পার্কের বিভিন্ন পশু-পাখী, জীবজন্তু ও বণ্যপ্রাণী মারা যাচ্ছে। পার্ক পরিচালনায় কর্তৃপক্ষের চরম গাফেলতি ও অবহেলাকে দায়ী করছে অনেকে। পার্ক তদারকির দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা একটু সচেতন ও কর্তব্য পরায়ন হলেই পার্কে থাকা হাজারো প্রজাতির পশু-পাখি ও জীবজন্তু গুলো অকাল মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
হাতির শাবকটির ময়না তদন্ত করেন চকরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আরিফ উদ্দিন ও ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকার নাইন।
আরিফ উদ্দিন বলেন, ‘ময়না তদন্ত শেষে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, ভাইরাস ইনফেকশনের কারণে শাবকটি মারা গেছে। শাবকটির হৃৎপিন্ড, ফুসফুস, কিডনি ও অন্ত্রে রক্ত পাওয়া গেছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ উদ্ঘাটন করতে শাবকটির শরীর থেকে হৃৎপিন্ড, ফুসফুস, কিডনি ও অন্ত্রের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।’
রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মঞ্জরুল আলম বলেন, ‘ময়না তদন্ত করে হাতির শাবকটির শরীর থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে পাঠানো হবে।’
পরে শাবকটি মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাঠকের মতামত: